পাইলস কি?

পাইলস কি?

Posted on: 19 Nov, 2020

বৃহদান্ত্রের শেষাংশে রেক্টামের ভিতরে ও বাইরে কুশনের মত রক্তশিরার জালিকা থাকে,  যা প্রয়োজনে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে আমাদের দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ হিসাবে মল বাইরে বের করে দেয়।  যদি কোন কারণে এই রক্তশিরাগুলো সংক্রামিত হয় বা প্রদাহ হয় বা এগুলোর উপরে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয় তখন পাইলস বা হেমোরয়েডসে প্রদাহ হয় যাকে সাধারণ ভাষায় হেমোরয়েডস, পাইলস বা অর্শ রোগ বলে।

পাইলস হলে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে? 

১) মলত্যাগের সময় অস্বাভাবিক ব্যথা এবং জ্বালাপোড়া হতে পারে। 
২) মলত্যাগ এর শুরুতে বা পরে বা মলের সাথে রক্ত পড়া। 
৩) মলদ্বারে চারপাশ ফুলে যাওয়া। 
৪) মলদ্বারে প্রচন্ড চুলকানো।
৫) মলদ্বারের মধ্যে কাটা কাটা বিধার মত অনুভূতি, রোগী মনে করে মলদ্বারের ভিতরে একটি কাটার বল রয়েছে। 
৬) মলদ্বারের আশেপাশে ফেটে যাওয়া।
৭) অনেক সময় মলদ্বারের ভিতর থেকে আঙ্গুরের থাকার মত একটি মাংসপিণ্ড বের হয়ে আসা। 

এই লক্ষণগুলো থাকলে আপনি পাইলসের রোগী হিসেবে চিহ্নিত হতে পারেন।

পাইলস এর শ্রেণীবিভাগ:

সাধারণত পাইলস দুই প্রকার হয়ে থাকে-  ইন্টার্নাল পাইলস এবং এক্সটার্নাল পাইলস

প্রলাপ্স এর উপর ভিত্তি করে ইন্টারনাল পাইলসকে চারটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়- 
প্রথম পর্যায়: পাইলস ফুলে বাইরের দিকে বের হয়ে আসে না বা প্রলাপ্স হয় না। 
দ্বিতীয় পর্যায়:  মলমূত্র ত্যাগ করার সময় পাইলস ফুলে বাইরের দিকে বের হয়ে আসে এবং আপনা আপনি আবার ভিতরের দিকে চলে যায়। 
তৃতীয় পর্যায়ে:   মলমূত্র ত্যাগ করার সময় পাইলস ফুলে বাইরের দিকে বের হয়ে আসে, এরপর আর আপনা আপনি ভিতরের দিকে যায় না,  হাত দিয়ে ঠিক করে দিতে হয়।
চতুর্থ পর্যায়: পাইলস ফুলে বাইরের দিকে বের হয়ে আসে বা প্রলাপ্স হয় এবং তা আর নিজে ঠিক হয় না বা ঠিক করাও যায় না, তখন সেই পর্যায়ে কে পাইলস এর চতুর্থ পর্যায় হিসেবে নির্ণয় করা হয়।

পাইলস হওয়ার কারণ: 
১) দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত থাকা।
২) দীর্ঘদিন আমাশয় বা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত থাকা।
৩) মলত্যাগ করার সময় দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকা।
৪) দীর্ঘদিন ধরে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করার ফলে মলদ্বার বা এনাসের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি হওয়া।
৫) স্থূলতা এবং কায়িকশ্রম কম করার কারণে।
৬) ভারি মালপত্র দীর্ঘদিন বহন করার কারণে মলদ্বারের উপরে চাপ সৃষ্টি হয়ে  পাইলস রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
৭) ফাইবার টাইপের খাবার কম খাওয়া এবং রেডমিট বেশি খাওয়ার কারণে হতে পারে।
৮) নির্দিষ্ট সময় অন্তর কৃমির ওষুধ না খাওয়ার কারণে হতে পারে।
৯) গর্ভকালীন সময়ে "মা" দের মলদ্বার এর উপরে চাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে পাইলস হতে পারে।
১০) বিভিন্ন জটিল রোগের পরবর্তী অবস্থায় পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যেমন লিভারের বিভিন্ন রোগ, লিভার সিরোসিস,  ক্যান্সার,  এই রিলেটেড রোগের পরবর্তীতে পাইলস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
১১) এছাড়া পারিবারিক ইতিহাসের কারণেও অনেক সময় এই রোগ দেখা দিতে পারে। 

মূলত আমাদের এনাসে পোর্টাল ভেনাস সিস্টেমে কোন ভাল্ব না থাকায় যেকোনো কারণে মলদার অঞ্চলের শিরাগুলোতে চাপের ফলে পাইলস রোগ সৃষ্টি হতে পারে।

চিকিৎসা পদ্ধতি: 

প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতিতে সাধারণত রিং লাইগেশন,  লংগো অপারেশন বা লেজের অপারেশন করা হয়ে থাকে।

এছাড়া বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিভিন্ন চিকিৎসা রয়েছে যা গ্রহণ করার পরেও অনেক সময় রোগের কোন উন্নতি আসে না, তাদের জন্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় এই রোগ থেকে মুক্তির বেটার সমাধান হতে পারে।

Dr. Md. Yousuf Arafath 
BHMS (Dhaka university)
DMU (ultrasonography) (BTEB)
MPH (University of South Asia)
Int. Course in Palliative care (PCSB)
Public Health Specialist & Consultant Homeopathic medicine



Share This


Comments (1)

1. Patrick Henderson

28 Nov, 2020

Hi admin, very nice post and very helpful.


Post Your Comment